পোস্টগুলি

ডিসেম্বর ১, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

গল্প

ছোটগল্প (দূরত্ব)

ছবি
  দূরুত্ব দূরত্ব  “যখন নীরবে দূরে” দূরত্ব মাপার জন্যেই মিটার স্কেলের আবিষ্কার। অথচ আমাদের যে দূরত্ব, তা মিটারে আসবে না। মিটারে পারিপার্শিক দুরুত্ব আসে। স্কেল যা বাস্তব তার দুরুত্ব মাপতে পারে। অসীমে যা কিছুর অবস্থান তা স্কেল দিয়ে মাপা যায়না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, ইচ্ছেটা অবান্তর। নিজেকে সান্তনা দেওয়ার মতন, ক্ষুধার পেট আর পিঠ যখন একত্রিত সেই সময়ে বেঁচে আছি এই অনুভূতির মতন আমাদের দুরুত্ব। আমি ক্ষুধা তেমন অনুভব করিনি, ছোটবেলা একটু আধটু রেগে না খেয়ে থেকেছি। তাতে আমি জানিনা ক্ষুধা কি, আমি শুনেছি। দেখেছি, ক্ষুধার কাছে বুলেটও শুকনা খেজুর। আমাদের দুরুত্ব ক্ষুধার থেকেও তীব্র, যখন কিচ্ছু  থাকেনা তখন আমাদের দুরুত্ব থাকে।

কবিতা (বাবরি মসজিদ)

ছবি
  babri mosque মসজিদের গম্বুজ                          -আমির হামজা দূরে  থেকে শোনা যায় আজানের ধোনি  আমি বৃথা বসে আছি ফিরে দেখিনি আমাকে ডাকছে ডাহুক শালিক  মুয়াজ্জিন ডেকে যায় পঞ্চমবার জন্য। ডেকে যায় ডেকে যায় হৃদয়ে প্রহার ডেকে যায় বাঁধ ভাঙা কণ্ঠে জোয়ার। প্রাচীরের দেওয়ালে প্রহরীর ফজর এসার প্রহরে এসে ধোয়ানো হলো তার বসর সন্ধ্যের পরে জানাজার নামাজ ডেকে যায় ডেকে যায় স্তব্ধ নিঃসাড় কত বর্ষ জন্ম মৃত্যু শত শত  কত যুগ কাল জীবন প্রহার কত রত ডাকছে সে আদিম থেকে কল্যাণের লাগি ডেকে যায় ডেকে যায় আমি তো বিবাগী আমাকে যে ডেকে যায় মরুর পরশ ডেকে যায় কল্যাণ আর মধুর সরস  গ্লানি ক্লান্তি র গণ্ডি পেরিয়ে, আমাকে যে ডেকে যায় সর্বস্ব দিয়ে পার্থিব কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে আমি ধীর স্থির হেঁটে যাই  অপার্থিবের পথে।  মেম্বারে বসে আছে দুঃখী  ইমাম তখন  বাবরি মসজিদ ভোলেনি কেউ জনম জনম। 

ছোটগল্প (ভাঙা ছাতা)

ছবি
  ভাঙা ছাতা ভাঙ্গা ছাতা -আমির হামজা অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে, আমি কোন এক অচেনা দোকানের বাড়ন্ত টিনের চালের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। বাড়িতে শিলা একা, আজকে আমাকে জলদি যেতে বলেছিল। সঙ্গেও বলেছিল, “আজ বোধহয় বৃষ্টি হবে, তুমি না হয় ছাতা নিয়ে যাও।” মূলত না বললে আমি ছাতা নিয়ে আসতাম। কিন্তু আমি আমার ছাতাটা হারিয়ে ফেলেছি, আর বাসায় আছে শিলার ছাতা—স্বভাবতই মেয়েলি ছাতা। তাই, লোকে কি বলবে আর ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকবে সেই আশঙ্কায়, ওর ছাতা নিয়ে বেরোয়নি। বাসায় গেলে, ছাতা নিয়ে এক দফা কথা শুনতে হবে। আমি বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে এই কথাই ভাবছি। আরো ভাবছি এই বৃষ্টিরই এতদিনে শিলার সঙ্গে আমার পরিচয়। কিছুক্ষণ আগে ফোনেরও চার্জ শেষ হয়ে গেছে, ভাই আর নেটওয়ার্ক ব্রাউজিংও করতে পারছি না। এক বৃষ্টির দিনে, শুধু বৃষ্টি না, তীব্র বৃষ্টির দিনে, আমি এরকমই এক চাল দেওয়া দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। নিম্নে এক ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, এই শহরে আধা ঘণ্টা বৃষ্টি হলে আশেপাশের মূল সড়কে হাঁটু পর্যন্ত পানি যায়। আমি কলেজ শেষ করে তীব্র বৃষ্টির মধ্যে আটকা পড়ে গেছি। ডানে ফিরতেই দেখতে পেলাম, একটি মেয়ে বৃষ্টি সহ দমক...

Never Let Me Go movie review

ছবি
  never let me go ‘‘Never let me go’’মুভি রিভিউ(স্পয়লার অ্যালার্ট।)/ রিভিউর থেকে বেশি পোস্টমর্টেম হয়ে গেছে। {প্যারাগ্রাফ বড় করার জন্যে দুঃখিত। জানি কেউ পড়েনি তবে তাও, আত্মতৃপ্তি বলে একটা কথা আছে।} ‘আগামী সপ্তাহ থেকে আমারও ডোনেশন শুরু। আমি মাঝে মাঝেই এখানে আসি, এখানে দাঁড়িয়ে ভাবি আমার সেই ভুলে যাওয়া ছোটবেলার কথা। আর দূরে ওই দিগন্তের যেখানে আকাশ আর মাঠ একে অপরকে ছুঁয়ে গেছে সেদিকে দিকে তাকিয়ে কল্পনা করি, সেখানে হয়ত ছোট্ট একটা বিন্দুর মতন ওকে দেখা যাবে। ধীরে ধীরে ও এগিয়ে আসবে আমার দিকে। হয়ত আমাকে দেখতে পেয়ে উল্লসিত হয়ে হাত নাড়াবে। সম্ভবত আমাকে ডাকবে, এই পর্যন্তই। এর বেশি আর ভাবি না, এর বেশি আমি ভাবতে পারি না, ভাবতে চাই না। মাঝে মাঝে মনে হয়, আমাদের আর তাদের জীবন কি খুবই আলাদা? যাদের আমরা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে বাঁচাই? হয়ত না, আমরা সবাই হয়ত একই মানুষ। আমরা সবাই পরিপূর্ণ।’  এখানেই সিনেমা শেষ হয়ে যায়। এই শেষের সংলাপটা ক্যাথি আর ওর নিজের অভ্যন্তরীণ সংলাপ। সে সপ্তাহ আগেই তার সেই ছোটবেলা থেকে চেয়ে আসা টমিকে হারিয়েছে, হারিয়েছে বলতে এমন একটা সময়ের কথা বলা হয়েছে সিনেমায় ...

কবিতা (হাজার বছর ধরে)

ছবি
  হাজার বছর ধরে হাজার বছর ধরে            -আমির হামজা  জহির রায়হানের “হাজার বছর ধরে”এর মতন আমাদের আনাগোনা হাজার বছরের। যদিও ক্ষণকালের জন্ম, মৃত্যুর হিসেব ডেথ সার্টিফিকেটে লিখা আছে। সূর্য ডোবার সাথে সাথে তুমি আসো আঁধারে তোমার বাস, হৃদয়ে আধার থাকে, তোমার কণ্ঠে আধারের ত্রাস। কণ্ঠে মৃত্যু ধ্বনি “হাজার বছর ধরে” পলক পড়ে না তখন, প্রশ্বাস আবেগে আচ্ছাদন। থাকো না পাশে সারাক্ষণ, চলে যাও ছেড়ে দূরে— জাহাজ যেমন তীর থেকে দূরে যায় সরে,“হাজার বছর ধরে।” পাখির মৃত্যু শোক ভুলেনি গাছ অশোক। তুমি তো দিলে না দেখা, বললে না পাখির মৃত্যু কথা— যেভাবে কবুতর কথা কয়, “হাজার বছর ধরে।” মাগরিবের আজান হলে, সময় যায় যেন বেগে চলে। তাগবিরে তাহরীমা বাধার আগে ফাতিহা শুরু হলে রাকাত ছুটে যাওয়ার ভয় বেঁধে বসে; তুমি তো বাঁধলে না আবেশে।  আমার এ জীবন ক্ষুদ্র ফুরিয়ে যাচ্ছে মাগরিবের ওয়াক্তে এসে, “হাজার বছর ধরে।” ভিখারিনী তার অন্ধ ভিখারির জীর্ণশীর্ণ রগ ওঠা হাতটা ধরে দূরে চালের আশায় পথ দেখিয়ে নিয়ে চলে। তুমি তো ছিলে না পাশে, হাত ধরলে না এসে। আমি রহিনু একা এক ভিখারি “হাজার বছর...

ছোটগল্প (যদি কোনো দিন)

ছবি
  যদি কোনোদিন যদি কোনো দিন -আমির হামজা   “ হেটে গেছি আমি আয়ু রেখা ধরে। ” ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিলো রিফাত। দৈনিন্দিন রুটিন, ঘুমের মধ্যে থেকে বেরিয়ে বাস্তবিক দুনিয়ার অবাস্তবিকতায় আসতে তার ফোন প্রয়োজন। মানুষ বাস্তবতা থেকে এতটা বিচ্ছিন্ন যে ঘুম ভাঙার পরে ফোন ছাড়া বাস্তবতা বুঝা যায়না। ফোনের লোক স্ক্রিনে পরিচিতি এক প্রোফাইলের ম্যাসেজ। এর ম্যাসেজের আশায় ঘন্টার পরে ঘন্টা রাত অপেক্ষা করে থাকতে পারতো সে। একটা ম্যাসেজ তার রাত্রের সমস্ত ক্লান্তি নোটিফিকেশনের সাউন্ডের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে দিতে পারতো। টিভি তে দেখা ম্যাজিকের মতন, ম্যাজিশিয়ান কিভাবে কাপড়ের নিচে কবুতর নিয়ে হারিয়ে দেয়, সেই কবুতর ক্লান্তি আর ম্যাসেজ ম্যাজিশিয়ান। নোটিফিকেশনে ম্যাসেজ পড়া যাচ্ছে না, শুধু দেখা যাচ্ছে সুস্মিতা ম্যাসেজ করেছে। ভাবলো ম্যাসেজ দেখবে না। একটা সময় পরে আর দেখা কোনো কাজে আসে না, তবুও গল্প আগাতে হবে সেই আগানোর স্পিহায় আমি গল্পের কথক রিফাতকে দিয়ে ফোনের ম্যাসেজ চেক করলাম। মাথার চুলে গাজরা দেওয়া কালো শাড়ি পরিহিতা এক সপ্তসীর ছবি প্রোফাইলে। আধুনিকতা এখন নব্বুই দশকের সংস্কৃতির দিকে ক্রমশই ঢোলে পড়ছে। মান...

জনপ্রিয় লেখা

ছোটগল্প (ভাঙা ছাতা)

কবিতা (বাবরি মসজিদ)

Never Let Me Go movie review